একটি ভেক্টর রাশি যে ধ্রুবক হবে এমন কোনো কথা নেই। একটি ভেক্টর রাশি অন্য স্কেলার রাশির উপর নির্ভর করতে পারে। যেমন গতিশীল বস্তুর অবস্থান ভেক্টর সময় t এর উপর নির্ভর করে, অর্থাৎ অবস্থান ভেক্টর হচ্ছে সময় t এর অপেক্ষক। তেমনিভাবে সুষম ত্বরণে গতিশীল।
বস্তুর বেগ হচ্ছে সময় t এর অপেক্ষক। কোনো তড়িৎ আধান কর্তৃক সৃষ্ট তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুর তড়িৎ প্রাবল্য আধান থেকে বিন্দুটির দূরত্বের উপর নির্ভর করে। সাধারণ স্কেলার রাশির ন্যায় ভেক্টর রাশিরও অন্তরীকরণ করা যায়। ধরা যাক, একটি ভেক্টর যা স্কেলার রাশি u এর উপর নির্ভর করে অর্থাৎ ভেক্টর রাশি দুই স্কেলার রাশি " এর অপেক্ষক বা (u)। তাহলে
এখানে u হলো “ এর বৃদ্ধি এবং ∆হলো এর বৃদ্ধি (চিত্র : ২.৩৫)।
তাহলেu এর সাপেক্ষে এর অন্তরক হবে,
.. (2.26)
যদি কোনো স্থানের একটি এলাকায় প্রতিটি বিন্দুতে (x, y, z)কে একটি অন্তরীকরণযোগ্য রাশি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায় অর্থাৎ যদি একটি অন্তরীকরণযোগ্য স্কেলার অপেক্ষক হয়, তাহলে এর গ্রেডিয়েন্ট বা grad বা এর সংজ্ঞা হলো :
.. (2.31)
এটি একটি ভেক্টর রাশি। এর মান অবস্থানের সাপেক্ষে ঐ স্কেলার রাশির সর্বোচ্চ বৃদ্ধিহার নির্দেশ করে। তাছাড়া এ বৃদ্ধিহারের দিকই হবে স্কেলার রাশিটির গ্রেডিয়েন্টের দিক। স্কেলার ক্ষেত্র থেকে ভেক্টর ক্ষেত্রে উত্তরণের কৌশলই হচ্ছে স্কেলার রাশির গ্রেডিয়েন্ট নির্ণয় করা। গ্রেডিয়েন্ট হলো বিভিন্ন অক্ষের সাপেক্ষে কোনো স্কেলার ফাংশনের ঢাল।
যদি কোনো স্থানের একটি এলাকায় প্রতিটি বিন্দুতে (x, y, z) = কে একটি অন্তরীকরণযোগ্য
রাশি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায় অর্থাৎ যদি একটি অন্তরীকরণযোগ্য ভেক্টর অপেক্ষক হয়, তাহলে এর ডাইভারজেন্স
(div ) বা এর সংজ্ঞা হলো :
... (2.32)
লক্ষ্যণীয় যে, ডাইভারজেন্স হচ্ছে এবং এর ডট বা স্কেলার গুণফল এবং এটি একটি স্কেলার রাশি।
ডাইভারজেন্সের মাধ্যমে একটি ভেক্টর ক্ষেত্রকে স্কেলার ক্ষেত্রে রূপান্তর করা যায়। উল্লেখ্য যে, . = . হলেও কোনোভাবেই = . হবে না। কোনো ভেক্টর ক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে কোনো প্রবাহীর ডাইভারজেন্স ধনাত্মক হলে বুঝতে হবে, হয় প্রবাহীটি প্রসারিত হচ্ছে অর্থাৎ এর ঘনত্ব হ্রাস পাচ্ছে অথবা বিন্দুটি প্রবাহীটির একটি উৎস।
আবার ডাইভারজেন্স ঋণাত্মক হলে, হয় প্রবাহীটি সঙ্কুচিত হচ্ছে অর্থাৎ ঐ বিন্দুতে এর ঘনত্ব বৃদ্ধি প্রাপ্ত হচ্ছে বা বিন্দুটি একটি ঋণাত্মক উৎস বা সিঙ্ক ।
আবার কোনো ভেক্টর ক্ষেত্রের ডাইভারজেন্স শূন্য হলে ঐ ভেক্টর ক্ষেত্রকে সলিনয়ডাল বলে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে ঐ বিন্দুতে যে পরিমাণ প্রবাহী প্রবেশ করে ঠিক সেই পরিমাণ প্রবাহী বেরিয়েও যাবে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে div = 0
যদি কোনো স্থানের একটি এলাকায় প্রতিটি বিন্দুতে (x, y, z) = কে একটি অন্তরীকরণযোগ্য রাশি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায় অর্থাৎ যদি একটি অন্তরীকরণযোগ্য ভেক্টর অপেক্ষক হয়, তাহলে এর কার্ল
(curl ) বা এর সংজ্ঞা হলো :
... (2.33)
কোনো ভেক্টর ক্ষেত্রের কার্ল একটি ভেক্টর রাশি। এ ভেক্টরটির দিক ঐ ক্ষেত্রের উপর অঙ্কিত লম্ব বরাবর। এটি ঐ ক্ষেত্রের ঘূর্ণন ব্যাখ্যা করে। কোনো বিন্দুর চারদিকে ভেক্টরটি কতবার ঘোরে কার্ল তা নির্দেশ করে। যদি কোনো ভেক্টরের কার্ল শূন্য হয় তবে এটি অঘূর্ণনশীল (irrotational) হবে। অর্থাৎ = হলে ক্ষেত্রটি অঘূর্ণনশীল এবং সংরক্ষণশীল আর = হলে ক্ষেত্রটি ঘূর্ণনশীল এবং অসংরক্ষণশীল । রৈখিক বেগ এর কার্ল কৌণিক বেগ এর দ্বিগুণ, অর্থাৎ = 2 । কোনো ভেক্টরের কার্লের মান ঐ ভেক্টরের ক্ষেত্রে একক ক্ষেত্রফলের উপর সর্বোচ্চ রেখা যোগজের সমান। কোনো ভেক্টর ক্ষেত্রের কার্লের ডাইভারজেন্স শূন্য অর্থাৎ ()= 0 l
কোনো স্থানের কোনো এলাকা বা অঞ্চলের প্রতিটি বিন্দুতে যদি একটি স্কেলার রাশি [ (x, y, z) ] বিদ্যমান থাকে, তবে ঐ অঞ্চলকে ঐ রাশির স্কেলার ক্ষেত্র বলে ।
এখানে (x, y, z) কে বলা হয় একটি স্কেলার ফাংশন এবং ঐ অঞ্চলে একটি স্কেলার ক্ষেত্র নির্দেশ করে। যেমন, ঢাকা শহরের প্রতিটি বিন্দুতে একটি তাপমাত্রা আছে। যেকোনো সময়ে এ শহরের যেকোনো বিন্দুতে তাপমাত্রা জানা যাবে। তাপমাত্রা একটি স্কেলার রাশি। তাপমাত্রাকে আমরা একটা স্কেলার ফাংশন এবং ঢাকা শহরকে তাপমাত্রার স্কেলার ক্ষেত্র বিবেচনা করতে পারি। তেমনি কোনো আহিত বস্তুর চারপাশে তড়িৎ বিভব থাকে। যেহেতু তড়িৎ বিভব স্কেলার রাশি,
আমরা বলতে পারি আহিত বস্তুর চারপাশে একটি স্কেলার ক্ষেত্র বিদ্যমান। উদাহরণ : (x, y, z) = 5x2y - 3yz একটি স্কেলার ক্ষেত্র নির্দেশ করে।
এখানে (x, y, z) কে বলা হয় একটি ভেক্টর ফাংশন এবং ঐ অঞ্চলে একটি ভেক্টর ক্ষেত্র নির্দেশ করে। যেমন কোনো প্রবহমান তরল পদার্থের ভিতরে প্রতিটি বিন্দুতে তরলের একটি বেগ আছে। যেকোনো সময়ে তরলের যেকোনো বিন্দুতে এর বেগ জানা যায়। বেগ একটি ভেক্টর রাশি। বেগকে আমরা একটি ভেক্টর ফাংশন এবং প্রবহমান তরলকে বেগের ভেক্টর ক্ষেত্র বিবেচনা করতে পারি। তেমনি একটি আহিত বস্তুর চারপাশে তড়িৎ প্রাবল্য থাকে। যেহেতু তড়িৎ প্রাবল্য ভেক্টর রাশি, আমরা বলতে পারি আহিত বস্তুর চারপাশে একটি ভেক্টর ক্ষেত্র বিদ্যমান।
ভেক্টর ক্যালকুলাসে বহুল ব্যবহৃত অপারেটরটি হচ্ছে (ডেল)। স্যার হ্যামিলটন এটি আবিষ্কার করেন। আগে এটি নাবলা নামে পরিচিত ছিল । এটি একটি ভেক্টর অপারেটর। হচ্ছে,
=
ভেক্টর অপারেটরের সাহায্যে তিনটি রাশি তৈরি করা হয় যেগুলো পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন সূত্র ও তত্ত্ব ব্যাখ্যা করতে খুবই প্রয়োজন হয় । এগুলো হচ্ছে গ্রেডিয়েন্ট, ডাইভারজেন্স ও কার্ল।